১. ঘি বিস্কুট
উপকরণ
১ কাপ এবং ১ টেবিল-চামচ ময়দা। আধা কাপ ঘি। ১ চিমটি লবণ। আধা কাপ আইসিং সুগার বা চিনির মিহিগুঁড়া।
পদ্ধতি
ইলেক্ট্রিক ওভেন ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ১০ মিনিট প্রি-হিট করুন।
প্রথমেই ঘি চুলায় দিয়ে গলিয়ে নিন। গরম করবেন না। এবার এর ভেতর আইসিং সুগার এবং লবণ দিয়ে মিশিয়ে আস্তে আস্তে ময়দা দিয়ে মাখান। খুব বেশি মাখানোর দরকার নেই। ময়দা ভালোভাবে মিশে গেলেই হবে।
এবার মাখানো ময়দা ২০ থেকে ২২ ভাগ করুন। প্রত্যেক ভাগ দিয়ে গোল চ্যাপ্টা বিস্কুট বানিয়ে নিন। বিস্কুট খুব বেশি মোটা করবেন না। মোটা করলে মাঝখানে কাঁচা থাকবে।
বেইকিং ট্রেতে তেল মাখিয়ে নিন। ফাঁকা ফাঁকা করে বিস্কুটগুলো বসিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট প্রি-হিটেড ওভেনে ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বেইক করুন।
বিস্কুটের চারদিকে বাদামি রং হলেই ওভেন থেকে বের করে নিন। এক ঘণ্টা পর বিস্কুট খাওয়ার উপযোগী হবে।
কিছু কথা
উপকরণ মাপার জন্য একই মাপের কাপ ব্যবহার করুন। বিস্কুট ওভেন থেকে বের করার পর নরম থাকে। এক ঘণ্টা ভালো মতো ঠাণ্ডা করলেই মচমচে হয়ে যায়।
ওভেন ভেদে বেইকিংয়ের সময় কম বা বেশি হতে পারে। সবচেয়ে সহজ উপায় হল ওভেনে দেওয়ার পর বারবার দেখা। খুব বেশি সময় বেইক করলে বিস্কুট খারাপ হবে। ঠাণ্ডা হলে বাতাস ঢুকতে পারে না এমন পাত্রে সংরক্ষণ করুন।
২. নোনতা বিস্কুট
উপকরণ
ময়দা আড়াই কাপ। চিনি আধা চা-চামচ। পানি ১ টেবিল-চামচ। বেকিং পাউডার ১ চা-চামচ। লবণ ১ চা-চামচের চেয়ে সামান্য কম বা হাফ চা চামচ। কালোজিরা ১ চা-চামচ। ঘি বা বাটার ১৫০ গ্রাম (তেলও দিতে পারেন ঘিয়ের বদলে)। এলাচগুঁড়া ১ চিমটি। তেল ১ চা-চামচ।
পদ্ধতি
প্রথমে ময়দা, কালোজিরা, লবণ দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন দুতিন সেকেন্ড। এবার এতে চিনি আর এলাচগুঁড়া মেশান।
আগে বলে নি , এখানে প্রতিটি উপকরণ আলাদা আলাদা করে মেশাতে হবে।
এবার বেকিং পাউডার ও পানি দিয়ে আবার ব্লেন্ড করুন। তারপর বাটার মেশান।
প্রথমে হাফ বাটার দিয়ে ব্লেন্ড করুন। হাত কাঠি বা স্পাচুলা দিয়ে মিক্সারটা নেড়ে দিন। এখন বাকি বাটার দিয়ে আবার ব্লেন্ড করুন ১ মিনিটের মতো।মিশ্রণটা হাতে নিয়ে দেখুন। যদি হাতে লেগে থাকে তাহলে বুঝবেন তৈরি হয়ে গেছে বা খামিরটা পারফেক্ট। আর যদি দেখেন যে মিশ্রণটা পড়ে যাচ্ছে বা গুঁড়া গুঁড়া থেকে গেছে, তাহলে আরও ১ চা-চামচ তেল বা ঘি দিয়ে আবার ব্লেন্ড করে নিন।
এখন ২০০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় প্রি-হিট করুন ওভেন। খামিরগুলো একটি বাটিতে ঢেলে নিন। তারপর ছোট বা মিডিয়াম গোল বল বানিয়ে নিন হাতে। একটু চেপ্টা করে দিন তারপর বেইকিং ট্রে’তে বেইকিং শিটের উপর একটু ফাঁক ফাঁক করে রাখুন।
একটি কাঁটাচামচ দিয়ে উপরে হালকা চাপ দিয়ে ডিজাইন করুন। এবার প্রি-হিটেট ওভেনে ১০ থেকে ১২ মিনিট বেইক করুন বা সোনালি রং আসা পর্যন্ত বেইক করুন।
হয়ে গেল নোনতা বিস্কুট ।
৩. বেলা বিস্কুট (চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বেলা বিস্কুট)
উপকরণ: তরল দুধ আধা কাপ। মাখন ২ টেবিল-চামচ। চিনি ১/৩ কাপ। লবণ ১ চা-চামচ। ডিম ১টি। বেইকিং পাউডার আধা চা-চামচ। ইস্ট ১ চা-চামচ। ময়দা ২ কাপ। দারুচিনির গুঁড়া ১/৪ চা-চামচ। মৌরি/মোটা জিরাগুঁড়া ১/৪ চা-চামচ। চিকন জিরাগুঁড়া ১/৪ চা-চামচ। গরম মসলাগুঁড়া ১ চিমটি। ভ্যানিলা এসেন্স আধা চা-চামচ। ব্রাশ করে দেওয়ার জন্য গলানো মাখন আরও ২ টেবিল-চামচ।
পদ্ধতি: দুধ হালকা গরম করে নিন। বেশি গরম করা যাবে না। একটু ঠাণ্ডা হলেই ইস্ট ও ৩ চা-চামচ চিনি দিয়ে মিশিয়ে পাঁচ থেকে ১০ মিনিট রেখে দিন। ইস্ট ফুলে যাবে।
বাকি উপকরণগুলো ময়দার সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিন। ইস্ট মেশানো দুধ, ময়দার মিশ্রণে দিয়ে দিন।
পরিমাণ মতো পানি মিশিয়ে ডো তৈরি করে একটা গরম জায়গায় দুই থেকে চার ঘণ্টা রেখে দিন। এসময়ের মধ্যে ডো ফুলে যাবে।
ওভেন ৩২৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটে প্রিহিট করুন।
একটা বেইকিং ট্রেতে এর অর্ধেক পানি নিয়ে ওভেনে দিয়ে রাখুন। এতে বিস্কুটটা সুন্দর হবে।
প্রায় চার ঘণ্টা পর ডোটা কিছু ময়দা দিয়ে মথে ছোট ছোট অনেকগুলো বলের আকারে ভাগ করে নিন।
যে ট্রেতে বেইক করবেন তাতে, অল্প অল্প দূরত্বে ছোট ছোট ডোগুলো বসিয়ে দিন।
অবশ্যই দূরত্ব বজায় রেখে বসাবেন। নইলে একটার সঙ্গে আরেকটা লেগে যেতে পারে।
এবার একটা ভেজা তোয়ালে দিয়ে ডোগুলো ৩০ থেকে ৪০ মিনিট ঢেকে রাখুন। আবারও ফুলে উঠবে।
৪০ মিনিট পর তোয়ালে উঠিয়ে গলানো মাখন ডোয়ের উপর ব্রাশ করে দিন।
৩২৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় ১২ থেকে ১৫ মিনিট বেইক করুন। উপরের দিকে একটু খয়েরি ভাব হলে বের করে ফেলুন।
ঠাণ্ডা হতে দিন। তারপর ছুরি দিয়ে মাঝ বরাবর কেটে কেটে দিন। আবার বেইকিং ট্রেতে রাখুন।
ওভেন ৩শ’ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় প্রিহিট করে বিস্কুটের ট্রেটি আবার বেইক করতে দিন।
এই সময় বিস্কুট বেইক হতে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ মিনিট সময় লাগবে। তবে ১০ মিনিট পর পর ওভেন থামিয়ে উল্টিয়ে-পাল্টিয়ে দেবেন।
খেয়াল রাখবেন যেন আবার পুড়ে না যায়। এক এক জনের ওভেন এক এক রকম হয়ে থেকে। তাই বেইক করার সময় খেয়াল রাখবেন।
বিস্কুটের দুই পাশেই রংটা সুন্দর হয়ে আসলেই বের করে নিন। ঠাণ্ডা হলে পরিবেশন করুন।
এয়ার টাইট বাক্স অথবা বাতাস ঢুকবে না এমন বাক্স কিংবা কৌটায় রেখে অনেক দিন রেখে খেতে পারবেন।
- ৪. অাটার বিস্কুট
- উপকরনঃ
- 1 কাপ আটা,1/2 কাপ গুঁড়ো চিনি,1/2 কাপ মাখন,1/2চা চামচ বেকিং পাউডার,2চা চামচ দুধ
- পদ্ধতিঃ
গুঁড়ো চিনি ও মাখন একসঙ্গে ফেটিয়ে নিন। আটার সঙ্গে বেকিং পাউডার ভালো করে মিশিয়ে নিন।
আটার মিশ্রণটি মাখনের মিশ্রণে সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে দুধ দিয়ে মেখে নিন এবং আধা ঘণ্টা ফ্রিজে ঢাকা দিয়ে রেখে দিন।
- আটা মাখা টা অল্প শুকনো আঠা ছড়িয়ে বড় একটা রুটি বেলে নিয়ে কুকি কাটার দিয়ে গোল গোল করে কেটে নিন এবং এর মাঝখানে কাটা চামচ দিয়ে ফুটো বানিয়ে দিন।
মাইক্রোওভেন 180 ডিগ্রীতে কনভেকশন মোডে প্রিহিট করে নিয়ে বিস্কুট গুলো 15 মিনিট বেক করে নিন
হয়ে গেলো অাপনার পছন্দের বিস্কুট।
৫. নারিকেলের বিস্কুট
খুবই মজাদার ও মুচমুচে একটি খাবার হলো নারকেলের বিস্কুট। এটি সকালে ও বিকালে নাস্তার সঙ্গে খেতে পারেন। আবার এটি তৈরি করে অনেক দিন সংরক্ষণ করতে পারেন।
উপকরণ: নারকেল ১ কাপ পরিমাণ (ব্লেন্ডারে পানি ছাড়া পিষে নিতে হবে), চালের গুঁড়ো ২কাপ, চিনি স্বাদ মতো, স্বাদ মতো লবণ, তেল পরিমাণ মতো।
প্রণালী: প্রথমে নারকেলের সঙ্গে একটু বেশি পরিমান চিনি মিশিয়ে মেখে নিতে হবে। চিনি আর নারকেল এমনভাবে মাখাতে হবে যেন চিনি গুলে যায়। এবার এর মধ্যে অল্প করে চালের গুঁড়ো দিয়ে মাখিয়ে নিতে হবে। চালের গুঁড়ো ব্যবহার করার আগে চালুনি দিয়ে চেলে নিতে হবে। যাতে এর মধ্যে কোন সুজি না থাকে। চালের গুঁড়ো দিয়ে মাখিয়ে একটা রুটি বানানোর খামির মতো বানিয়ে নিতে হবে। তারপর এগুলো ঢেকে এক ঘণ্টার মতো রেখে দিতে হবে। এবার বিস্কুট তৈরি ছাঁচে খামি থেকে অল্প অল্প ময়দা নিয়ে ছাঁচের মধ্যে দিতে হবে। এতে বিস্কুটগুলোতে খুব সুন্দর ডিজাইন হবে। এভাবেই সবগুলো বিস্কুট তৈরি করে নিতে হবে। এবার তৈরি করা বিস্কুটগুলো ভেঁজে নিন।
একটি প্যানে পরিমাণ মতো তেল দিতে হবে। চুলার আঁচ মিডিয়ামে রেখে তেল ভালোভাবে গরম করতে হবে। এরপর বিস্কুটগুলো দিয়ে দিতে হবে। দুই মিনিট পর বিস্কুটগুলো উল্টে দিতে হবে। খুব সাবধানে বিস্কুটগুলো উল্টাতে হবে নাহলে ভেঙে যেতে পারে। এভাবে বিস্কুটগুলো লাল লাল করে ভেঁজে নিন। খুব সুন্দর লাল রঙের আর শক্ত হলে বিস্কুটগুলো তুলে নিতে হবে। এগুলো তুলে একটি টিস্যু পেপারের উপর রাখবেন যাতে অতিরিক্ত তেল শুষে যায়। এভাবেই খুব সহজে মচমচে ও সুস্বাদু নারকেলের বিস্কুট বাসায় তৈরি করে নিতে পারেন। এগুলো যেকোন বাতাস প্রতিরোধক কন্টিনারে রেখে প্রায় এক মাসের মতো সংরক্ষণ করতে পারবেন।